আন রিলিজড স্টোরী (৩) – বালাগঞ্জ এর গল্প
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ৯:০৭ মিনিটজুয়েল সাদত:
আমার জীবনে কখনও বালাগঞ্জ যাইনি। আসলে যাওয়া হয়ে উঠেনি। এম সি কলেজে ও সিলেট ল কলেজে আমার সহপাঠী অনেকেই ছিলেন ঐ এলাকার।
১৬ মার্চে আমি বিশ্বনাথে যাই দুপুরে, ওয়ান পাউন্ড হসপিটাল পরিদর্শন ও সেখানে নানা ব্যাস্ততা ও লাঞ্চ এর পর আমার হাতে বেশ কিছু সময় ছিল। রুহুল আমিন ও ফাহিম সাথে, তাদের বলি এখন বালাগঞ্জ যাব। তাদের এ কদিনে ধারনা হয়ে গেছে, আমি কোথায়? কেন যাই? বালাগঞ্জ বিশ্বনাথ থেকে ৩১ কি: মিটার। অনেকদুর। আমার একজন প্রিয় মানুষ সাকির আহমেদ সিকদার , সিলেটের সুপরিচিত রোটারিয়ান বর্তমানে নিউজার্সি থাকেন। সাকির ভাইয়ের বাড়ী যাব। ( আমার অনুরোধে তিনি ও দারুল আজহার মাদরাসার পরিচালক)
আমার এত ব্যাস্ততা তিনি আমাকে জোর করতে পারছেন না, তবে উনার আগ্রহ আমি যেন উনার প্রজেক্ট দেখে আসি।
তিলক চানপুর ( চেয়ারম্যান বাড়ী) মাদরাসার পাশে এরকম একটা ঠিকানায় পৌছাই।
আমি উনাকে সারপ্রাইজ দেবার জন্য রওয়ানা হলাম। উনার বন্ধু ও পার্টনার দেলওয়ার ভাই আমাকে সেখানে নিয়ে যাবার কথা। ব্যাটে বলে হচ্ছিল না।
যখন সেখানে পৌছালাম তখন বিকেল ৫ টা, আমেরিকা থেকে সাকের ভাই উনার বাড়ীর সব ভাই ভাতিজাদের হাজির করালেন সাথে সাথে। ফোনের উপর ফোন। আমি উনার স্বপ্নের বাগানে, সাথে উনার কাজিনরা।। বাগানে মাল্টা, কদু সহ নানা সব্জি। এক কথায় অসাধারন জায়গা।। তিনি যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষিত যুবক, সারা জীবন গাছ গাছড়া নিয়ে ছিলেন।। তিনি একটি বড় প্রজেক্ট নিয়ে আটকে আছেন, বড় স্বপ্নকে নিয়ে হাটছেন। একটি মাল্টি লেভেলের বাগানবাড়ী করবেন। হরীণ, ময়ুর,পশু পাখি, সহ একটি মিনি চিড়িয়াখানা করবেন, সাথে শর্ট রেন্টাল কোটেজ।। স্বপ্নের পরিধি অনেক বৃহদ।। ইনভেষ্টার দরকার।। বালাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন উনার ভাতিজা, অনুর্ধ ১৯ এর ক্রিকেটার সাকিব উনার ভাতিজা, সাকিবের পিতা আমার সাথে ছিলেন। সাকিবের পিতার সাথে সাকিবের বেড়ে উঠা নিয়ে গল্প শুনি।
পরিবারের অনেকেই উপস্থিত হন আমাকে দেখার জন্য , আমরা সবজি বাগান নিয়ে ও সাকের ভাইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করি। পরিবারের সকলের সম্পৃক্তা নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়। সাথে সাথে বাগানের আমের চাটনি খাই। নানা খাবার পরিবেশন করা হয়। সবাই চম্যকার মানুষ।
পুরো বাগানে কদুর ফলন, গত বছর থেকে বাণিজ্যিক বিক্রি শুরু হয়েছে।। অনেক জায়গা কেনার পরিকল্পনা, গরুর ফার্ম ও মাছ চাষের বিশাল সম্ভাবনা।
সন্ধায় ঠিক আগে সব্জি বাগানের সৌন্দর্য অন্যরকম। যারা এই বাগানটায় কাজ করছেন তাদের সাথে দীর্ঘ সময় কথা হয়।
সাকের ভাই সব সময় ফোনে এই বাগানের গল্পে মাতিয়ে রাখতেন। আজ আমি বাগানে।। মাঝে মাঝে পাগলামি মনে হলেও মনে হয় একেক মানুষের দৃষ্টিকোণ একেক রকম।। নিউজার্সির বিজি লাইফ কে পাশ কাটিয়ে সব টাকা সব্জি বাগানে ইনভেষ্ট করছেন তিনি।। যদিও সব্জি বাগান লাভ জনক এই সময়টায়।
তিনি কতটা খুশি হয়েছেন, বলে বোঝানো যাবে না।। আর আমার গৌল থাকে মানুষকে আনন্দে ভরে তুলা।
সাকের ভাইয়ের মহিলাদের সেলাই প্রশিক্ষণ একাডেমী আছে । বড় পরিসরে তিনি শীতল পাঠীর প্রজেক্ট করতে চান।
আমার সফরসঙ্গী রাও বেশ উপভোগ করল বিকেলটা।। আসার সময় বেশ কিছু সবৃজি পাওয়া গেল।
বালাগঞ্জ এর বাড়ীঘর গুলো বিশ্বনাথের মত না। এগুলো বেশ পরি্মার্জিত। বিশ্বনাথের মত কোটি কোটি টাকার বাড়ীঘর নেই। বালাগঞ্জ এর কৃতি সন্তান মরহুম এম এ জি ওসমানী ও মরহুম এডমিরাল এম এ খান ।
বালাগজ এর রাস্তাঘাট ও সুন্দর। ভৌগলিক ভাবে এটা সিলেটের ফেন্চুগঞ্জ এর সাথে বর্তমানে। নদী ঐপারে রাজনগর মৌলভীবাজার জেলা।
সন্ধায় আমরা আবার বিশ্বনাথের হাসনাজি নামের একটি গ্রামে রওয়ানা হই। ঐ দিন রাত ৯ টায় শিবগঞ্জ এর “চাখুম” নামের একটা মনিপুরী শেফের রেস্টুরেন্ট ফিরে আসি দাওয়াতে।।
চলবে –