অপপ্রচার ও হয়রানির প্রতিকার চাইলেন দক্ষিণ সুরমার ব্যবসায়ী সবুজ আহমদ
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ নভেম্বর ২০২২, ৮:৪৮ মিনিটস্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু ও অপরাধী চক্রের হামলা-মামলা, হয়রানি ও মানহানিকর অপপ্রচার এবং অপতৎপরতার প্রতিকার চেয়েছেন দক্ষিণ সুরমার বারখলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মো. বাবুল মিয়ার পুত্র ব্যবসায়ী মো. সবুজ আহমদ। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেছেন, ‘সিলেট সিটির দক্ষিণ সুরমার বারখলার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে মিছবাহুর রহমান মিছবাহসহ সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার ও হামলা-মামলা অব্যাহত রেখেছে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘মিছবাহ ও তার ছেলে ইজাজুর রহমান কাফি, মানিক মিয়ার ছেলে রিমন আহমদ, জুনেদ আহমদ এবং সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নতুন পারকুলের আবুল বাশারের পুত্র মো. সামছুল ইসলামসহ এই চক্র ভূমিদস্যুতা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী হামলা-মামলাসহ নানারকম অপরাধ অপকর্মে লিপ্ত। তাদের স্বজন ও পরিবারের বিরুদ্ধে অনৈতিক ব্যবসা, পুলিশের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের দায়ে রাষ্ট্রবাদী একাধিক মামলা রয়েছে। এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানায় এমন দুটি মামলার প্রমাণ রয়েছে।’
সবুজ আহমদ বলেন, ‘মিছবাহ ও কাফি চক্র আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা হামলা- মামলা ও জালিয়াতির আশ্রয়ে আমার ও আমার ক্রেতাদের স্বত্ব-মালিকানা কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে হামলা-মামলা চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিবি বলেন, গত ১৭ জুলাই মিছবাহ-কাফি ও তাদের দলবল আমাদের স্বত্বদখলীয় বসতভূমিতে সশস্ত্র হামলা চালায়। ‘চাঁদা নিতে ও ভূমি জবরদখলে ব্যর্থ হয়ে তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করে আমাদের বিরুদ্ধে নানা অপবাদ, মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।’ সম্প্রতি কাফি-মিছবাহ চক্র সিলেট সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিস এলাকায় পেয়ে তাকে ধাওয়া করে বলেও অভিযোগ করেন সবুজ।
তিনি বলেন,‘একজন ইংল্যান্ড প্রবাসীকে ‘মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক’ সাজিয়ে তার নাম বিক্রি করে বেআইনি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে গত ১৬ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের মানসম্মান ও ব্যবসায়িক ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করা হয়েছে।’ এসব ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে এসএমপি’র দক্ষিণ সূমরা থানায় গত ২৭ অক্টোবর এবং কোতোয়ালি থানায় ১৭ নভেম্বর পৃথক সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং দ-বিধি আইনে পৃথক মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
মিছবাহ-কাফি’রা সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গণমাধ্যমে যে সব তথ্য প্রচার করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা-বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে জালিয়াত ও প্রবাসীর ভূমি জবরদখলকারী আখ্যায়িত করে মিথ্যা, বানোয়াট ও অবমাননাকর তথ্য প্রচার করেছে। প্রকৃতপক্ষে, সিলেট জেলার বর্তমান দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা মৌজার এসএ ৩৮৮ নম্বর খতিয়ানের ৩০২ নম্বর দাগের ৭৫ শতক ভূমির মূল রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন ওয়াজিব উল্লাহ ও তার স্ত্রী জমিরা বানু।’
তিনি জানান, ওয়াসিব উল্লাহ মারা যাবার পর আছমা বানু গং দুলালদের কাছে জমি বিক্রি করেন। রেকর্ডীয় মালিক ও তাদের উত্তরাধিকারী এবং খরিদদার মালিক ও খাস দখলকারদের ধারাবাহিক দলিল ও নামজারী খতিয়ান/পর্চা মূলে খরিদক্রমে তিনি নিজে এই ভূমির মালিক দখলকার হন। সবুজ বলেন,‘এই ভূমিতে আমি বাড়ি নির্মাণ করি এবং আমার স্থলবর্তী ক্রেতাগণ (মো. আব্দুল আজিজ, মো. ইনুছ মিয়া, মো. আলাউদ্দিন ও বাবুল মিয়া) তাদের দখল বুঝে নিয়ে বাড়ি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে মিছবাহ-কাফি চক্র আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় তারা আমাদের কাজে নানারকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, থানায় এবং আদালতে মিছবাহ গংরা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তবে এসব মামলা পিবিআই’র তদন্তের মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে বলে দাবি তার। তিনি আরও বলেন, ‘এ চক্রের অন্যতম সদস্য মো. সামছুল ইসলামের নামে আনরেজিস্ট্রি একটি আমমোক্তার ও জনৈক ফজিলাতুন নুর নামে বেআইনি আরেকটি দলিল তৈরি করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সিলেট আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে বিবিধ ৩৫/২০২২ মোকদ্দমা করে। এই মোকদ্দমায়ও আমরা যথোপযুক্ত জবাব দাখিল করি। কিন্তু মিছবাহ-কাফি চক্র জবাবের শুনানিতে বারবার অনুপস্থিত থেকেছে।’ সবুজ আহমদ বলেন, ‘আমাদেরকে হয়রানির পেছনে রয়েছেন দক্ষিণ সুরমার বারখলা গ্রামের মৃত মো. ইদ্রিছ আলীর ছেলে লতিবুর রহমান। আমরা এসব মানহানিকর ও ক্ষতিকারক অপতৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। পাশাপাশি এসব হয়রানিমূলক অপতৎপরতার প্রতিকার দাবি করছি।’