সিলেটে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে স্বাস্থ্য সেবা সচিব বাংলাদেশে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ স্ট্রোক
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ২:২৫ মিনিটস্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে আন্তর্জাতিক সায়েন্টিফিক সেমিনারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মো: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেছেন, বাংলাদেশে স্ট্রোক মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ। বিশেষ করে এটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য গুরুতর অক্ষমতার একটি প্রধান কারণ। তবুও এটি প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য। ওষুধ ও পদ্ধতির মাধ্যমে স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা মস্তিষ্কের ক্ষতি কমাতে পারে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান সবসময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং মেডিকেল সাইন্স এর পরিবর্তন হচ্ছে আরো দ্রুত। তাই এ চিকিৎসায় জড়িত চিকিৎসকদের এই দ্রুত পরিবর্তনশীল চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
শুক্রবার সিলেটের পাঁচ তারকা হোটেল গ্রান্ড সিলেটে ‘ট্রান্সফরমেশন অব স্ট্রোক কেয়ার’ শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক সায়েন্টিফিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ড. মো: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) এর সভাপতি প্রফেসর ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, চিকিৎসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম আমিরুল মোরশেদ এবং সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ কুরাইশী। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মোঃ ময়নুল হক। কনফারেন্স সেক্রেটারি এবং প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়ার ফ্যাকাল্টি লিড (হেমাটোলজি) ড. আমিন ইসলাম পুরো সেমিনার সঞ্চালনা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিএইচএ-এর চেয়ারপারসন ড. তাসবিরুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, বিশ্বব্যাপী মৃত্যুহার এবং অসুস্থতার অন্যতম প্রধান কারণ স্ট্রোক। বাংলাদেশে স্ট্রোকের প্রভাব বিধ্বংসী। এজন্য যথাযথ চিকিৎসা জানা চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে স্ট্রোকের চিকিৎসা, প্রতিরোধ ও পুনর্বাসনে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে।
দিনব্যাপী এই বৈজ্ঞানিক সেমিনারে দেশ-বিদেশের ১৬ জন বিশেষজ্ঞ তিনটি অধিবেশনে আলোচনা করেন। প্রতিটি সেশন শেষে আমন্ত্রিত অতিথি এবং প্যানেলিস্ট এর কাছ থেকে একটি প্রশ্নোত্তর সেশন ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সচেতনতার ঘাটতি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য সেবনের প্রবণতা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনসহ নানা কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। এ কারণে মৃত্যুও বাড়ছে।
সেমিানারের আয়োজন করে প্ল্যানেটারি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া (পিএচএ)। এটি হল একটি মেডিকেল শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম যা জুলাই’২০-এ একদল অনাবাসিক বাংলাদেশী চিকিৎসক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটির লক্ষ্য স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ ১৫০ টিরও বেশি ফ্যাকাল্টি সদস্য রয়েছে পিএচএ’র।
সেমিনারের মূল প্রতিপাদ্য ছিলো ‘বাংলাদেশে স্ট্রোক কেয়ারের রূপান্তর’, র্যাাপিড রেসপন্স স্ট্রোক কেয়ার (হাইপার অ্যাকিউট স্ট্রোক এবং প্রতিরোধের ব্যবস্থাপনা)’ এবং ‘টাইম ইজ ব্রেন অ্যান্ড ডোর টু সুই অ্যাপ্রোচ: জীবন বাঁচানো এবং প্রতিবন্ধীতা প্রতিরোধ’।
স্বাগত বক্তব্যে ড. তাসবিরুল ইসলাম বলেন, নলেজ শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পিএইচএ সবসময় বাংলাদেশি চিকিৎসকদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে যুগোপযোগী জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে সহযোগিতায় বিশ্বাসী।
কনফারেন্স সেক্রেটারি এবং প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়ার ফ্যাকাল্টি লিড (হেমাটোলজি) ড. আমিন ইসলাম আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সেমিনার স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসায় উন্নয়নশীল এবং উন্নত বিশ্বের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরী করবে।