সাংবাদিক ফতেহ্ ওসমানী হত্যা মামলার রায় ঘোষনা ৬জনের যাবৎজীবন কারাদন্ড
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২২, ১:৩০ মিনিটএক যুগ পর সিলেটের চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক ফতেহ্ ওসমানী হত্যা মামলার রায় আজ সোমবার সিলেটের বিশেষ জেলা জজ ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে রায় ঘোষণার করা হয়েছে। রায়ে ৬জনের যাবৎজীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এই রাষ্ট্রপক্ষের পিপি মফুর আলী । ১জন আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল। এই রায়ে নিহত ফতেহ্ ওসমানীর পরিবারের পক্ষ থেকে নিহত ফতেহ্ ওসমানীর ছোট ভাই আল-ফরহাদ মতিন সন্তোষ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপক্ষে সিলেট বিশেষ জেলা জজ ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল এর পিপি এডভোকেট মো: মফুর আলী এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ ঘটনায় নিহত ফতেহ্ ওসমানীর ছোট ভাই আল-ফরহাদ মতিন বাদী হয়ে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী সাদ্দাম ওরফে টাইগার সাদ্দাম ও কাশেমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জনকে আসামী করে কতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং-৯৯ (২১-০৪-২০১০)। জিআর-৪৩০। ধারা-৩৪১/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৭৯ দ:বি:। ফতেহ্ ওসমানী মারা যাওয়ার পর পুলিশ মামলাটিতে ৩৯৬ ধারাটি যুক্ত করে। পরে দুই দফা তদন্ত শেষে প্রথমে কতোয়ালী থানার এসআই মোজাহারুল ইসলাম ও পরে এয়ারপোর্ট থানার এসআই আব্দুল আলীম মামলার সম্পূরক চাজর্শীট দাখিল করেন। এতে সুনামগঞ্জ সদর থানার মঙ্গলকাটা বাজার এলাকার দুর্লভপুর গ্রামের হানিফ মিয়ার পুত্র বর্তমানে নগরীর ইলাশকান্দি আলতু মিয়ার কলোনীর বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন ওরফে টাইগার সাদ্দাম (২২), জৈন্তাপুর থানার আদর্শগ্রামের হাবিবুর রহমানের পুত্র মো: কাশেম আলী (২২), সুনামগঞ্জ জেলার বিশ^ম্ভরপুর থানার আমতলী গ্রামের রাজন মিয়ার পুত্র বর্তমানে শাহপরান থানার টুলটিকর এলাকার বাসিন্দা সুমন (২২), নগরীর আরামবাগ ১৩ নং বাসার সিরাজ মিয়ার পুত্র স্বপন মিয়া (২৫), কিশোরগঞ্জ সদর থানার নগুয়া গ্রামের আজিজুর রহমান ওরফে আব্দুল আজিজের পুত্র বর্তমানে শাহপরান থানার বটেরতল বাবু মিয়ার কলোনীর বাসিন্দা মো: ফয়ছল আহমদ রাসেল (২৩) ও সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার ভাটিপাড়ার (গণকা) জাহান নুরের পুত্র বর্তমানে উত্তর বালুচর আল-ইসলাহ্ এর বাসিন্দা শাহ আলম (২৪)। আসামীদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরমধ্যে কাশেম আলী ও সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এরপর উল্লেখিত সকল আসামীকে অভিযুক্ত করে ২০১৩ সালের ২১ মে চার্জগঠন করে আদালত এ মামলার বিচার কার্য শুরু করেন। ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে সাংবাদিক ফতেহ্ ওসমানী তার বন্ধু আব্দুল মালেককে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাসায় ফিরছিলেন । রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর শাহী ঈদগাহস্থ শাহ মীর (র:) মাজারের সামনের রাস্তায় পৌঁছামাত্র ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ফতেহ ওসমানী ও তার বন্ধু আব্দুল মালেক আহত হন এবং ২৮ এপ্রিল রাতে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
এর মধ্যে চার্জশিটে ৭নং সাক্ষী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন ফতেহ ওসমানীর বন্ধু আব্দুল মালেক। কিন্তু, তিনি আদালতে সাক্ষ্য দেননি।