দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনা সাজানো নাটক
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৪৮ মিনিটপাঠানটুলার গ্রিন হোটেলে দুই তরুণীকে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনাকে সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন নগরের পশ্চিম পাঠানটুলার বাসিন্দা ও যুবলীগ নেতা রানা আহমদ শিপলুর স্ত্রী তাহমিনা খানম। সোমবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন আমার স্বামীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে একটি ধর্ষণ ঘটনার নাটক সাজিয়ে তাকে আসামি করেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আমার ও আমার পরিবারের লোকদের সম্মানহানি ঘটছে।’
লিখিত বক্তব্যে তাহমিনা বলেন, ‘আমার স্বামী রানা আহমদ শিপলু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আগামী সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি ইতোপূর্বে পোস্টার, ব্যানার, পেস্টুন লাগিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে সামাজিক নানাধরনের সেবামূলক কাজে যুক্ত রয়েছেন। রাগীব রাবেয়া মেডিকেলের পাশেই আমার স্বামীর একটি ফার্মেসি রয়েছে। পাশাপাশি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হোসেন এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারি তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ও আমার পরিবারের মান-সম্মান ক্ষুন্ন করতে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতিসাধন ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে স্থানীয় ছাত্রদলের তানভীর মিথ্যা-কল্পকাহিনী সাজিয়ে মিথ্যা বর্ণনায় একাধিক মামলা দাখিল করেছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে ন্যায় ও সৎ পথে থাকার কারণে তারা এসব মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।’
তাহমিনা বলেন, ‘এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার স্বামী রানা আহমদ শিপলুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে একটি ধর্ষণ ঘটনার নাটক সাজিয়ে তাকে আসামি করেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আমার ও আমার পরিবারের লোকদের সম্মানহানি ঘটছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ও তার ভাইদেরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করে, তা দখল করতে এবং সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে ইতোপূর্বে কয়েকজন ভূমিখেকো, রাজনৈতিক নেতা নানা কৌশল করে ৬টি মিথ্যে মামলা দাখিল করেছে। এর মধ্যে ৪ টি মামলায় আদালত খালাস প্রদান করেন। আর দুটি মামলা এখনও বিচারাধিন। আমার বিশ^াস আদালতে চলমান দুটি মামলা থেকেও তারা অব্যাহতি পাবেন।’
সম্প্রতি পাঠানটুলায় সংঘটিত ধর্ষণ মামলায় তাহমিনার স্বামীকে আসামি করাকে সেসব ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট এসএমপির জালালাবাদ থানায় দুই তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে যে মামলা করেছেন তা সম্পূর্ণ সাজানো, মিথ্যা ও বানোয়াট। ওইদিন গ্রীণ হোটেলের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী ৩০১ নম্বর কক্ষে কোনো বর্ডার উঠেনি। ৩০৩ নম্বর কক্ষে গৃহিনী পরিচয়ে তিনজন মহিলা উঠেছিলেন, তাদের বাড়ি বিয়ানীবাজারে।’
মামলা দুইটির এজাহারে দুই তরুণীর বক্তব্যের বেশ গরমিল আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাতে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে হোটেল কর্তৃপক্ষ বা হোটেলে থাকা অন্যান্য বর্ডারকে বলতে পারতেন। সেখানে থাকা কেউই তাদের চিৎকার বা আওয়াজ পাননি। জরুরি নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করেও কিছু জানাননি তারা। এতেই পরিস্কার হচ্ছে ধর্ষণের ঘটনাটি সাজানো কল্পকাহিনী এবং ডাহা মিথ্যা নাটক।’
শিপলুর স্ত্রী আরও বলেন, ‘ধর্ষনের ঘটনাটি পরিকল্পনা মাফিক সাজানো। অন্য কেউ মামলার এজাহার লেখে দুই তরুণীর সাক্ষর নিয়ে আমার স্বামীর নামে মিথ্যা, বানোয়াট, অসথ্য কল্পকাহিনী সাজিয়েছেন। এতে আমার স্বামীর মান-সম্মান বিনষ্ট ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার অভিপ্রায় রয়েছে।’ মামলা থেকে নিরপরাদ স্বামীর মুক্তি দাবি করে তিনি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জালালাবাদ থানার ওসিসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মামলার বাদী দুই তরুণীর চারিত্রিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই তাদের ডিএনএ টেস্ট করলে এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। অসামাজিকতায় তিনটি ছেলেসহ নগরের বন্দর বাজার ও মহাজনট্টির দুটি হোটেলে দুইবার তারা ধরা পড়েছিল। আসামি তানিয়া ও তার দুই বান্ধবীর বিরুদ্ধে আদালতে আরও দুটি মামলা রয়েছে, যার কাগজ আমার সংগ্রহ করেছি।’ প্রতিপক্ষ তানভীর একজন মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী এবং সমাজের চিহিৃত সন্ত্রাসী উল্লেখ করে তাহমিনা খানম বলেন, ‘তানভীরের পরিকল্পনায় আমার স্বামীকে ফাঁসাতে এই নাটক সাজানো হয়েছে। তানভীরের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা রয়েছে। বিউটি পার্লারে কাজ করা তানিয়া ও জুবেলের সঙ্গে তানভীরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।’