আলোয় ভূবন ভরা
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:০৫ মিনিটমোয়াজ আফসার
বিয়ের উনিশতম দিবস। এই সময়ের ভেতর নাহিয়ানের সাথে বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎ হয়েছে আমার। শহর ছেড়ে একটু দূরে ভ্রমনও হয়েছে দু’একবার। তবু আড়ষ্টতা যেন কাটতে চায় না। ও যেমন আমিও ঠিক তাই। আমাদের মধ্যে যে আলোচনা হয় তা জমে ওঠে না, বেশি দূর টেনেও নিতে পারিনা। নয়া দামান। এ কারণটাই হয়তোবা এখানে লুকোচুরি খেলে। ওদের সিটিং রুমে বসে চা খেতে খেতে আলাপ করছিলাম ওর বাবা মোহাম্মদ আব্দুল মোহাইমিন চৌধুরী’র সাথে। উনি কবিতা লিখেন বেশ। চমৎকার সন্ধ্যা। সূর্য সারা দিনের ক্লান্তি শেষে বিদেয় নিয়েছে একটু আগে। চৌধুরী হঠাৎ করেই আমায় শুনিয়ে দিলেন তাঁর লিখা চার পাঁচ মিনিটের একটি কবিতা। স্ত্রী আমেনা মোহাইমিন চৌধুরী মাঝে মাঝেই এসে খোঁজ নিচ্ছিলেন নতুন বেয়াইয়ের। চটপটে মহিলা,কথায় বেশ পটু। স্বামীর মুখে কবিতা শুনে আমার দিকে তাকালেন একবার, একটু হেসে পরে অন্দরমহলে চলে গেলেন। এরই মধ্যে আবির্ভাব আমাদের নতুন জামাতা নাহিয়ানের। খুব ধীর পায়ে ও আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। হাতে খুব সুন্দর মোড়কে বাঁধা কি একটা বস্তু আমার হাতে তুলে দিয়ে বলে, এটা আমার জন্যে একটা গিফট। গিফট পেলে কার না মন খুশি হয়। আমার বেলাতেও এর ব্যতিক্রম হলো না। তবু মন যেন একটু বিনয়ী হয়ে উঠলো। বলে উঠলাম আমার জন্যে আবার এটা কেন। জিজ্ঞেস করলাম কি আছে এতে? বলল একটা বই। বইয়ের মোড়কটা আমি আর খুলি না। কত শত বই বাজারে। মনে মনে ভাবি কি বই হতে পারে। কি পড়তে আমি স্বচ্ছন্দ বোধ করি তার আদৌ কি জানা আছে! যা-ই হোক আমার কাছে এটি অতি মূল্যবান। জামাতার প্রথম উপহার। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের ষোড়শ বই মেলা চলছিলো। বইটি নিয়ে গেলাম ওখানে। বই মেলা মঞ্চে বন্ধু গল্পকার সেলিম আউয়াল আর আমার জায়া ফাহমিদাকে সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হলো মোড়ক। বেরিয়ে আসলো একটি ভ্রমন কাহিনী।
বইটি দেখে হৃদয় কোণে একটু আশ্বস্ততা যেন টের পাই।
যেখানটায় আমার বসবাস সেটিই কুড়িয়ে তুলে এনেছে নাহিয়ান। ভীষণ ভালো লাগার বই হাবিব রহমানের ‘ঘুরে দেখা ইউরোপ’। চমৎকার প্রিন্ট এবং দারুন বাইন্ডিংয়ের মলাটের ভেতর লেখক তাঁর ঘুরে দেখা ছাপ্পান্নটি নগরীর বর্ণনা নির্মলভাবে উপস্থাপন করেছেন। কখনো পায়ে হেটে কখনো টেক্সিতে চড়ে কখনোবা ট্রেনে করে তথ্য সংগ্রহ করেছেন যা পাঠক মাত্রই ইউরোপ ঘুরে আসার স্বাদ পেয়ে যাবেন অনেকখানি। এসব দেশ কেউ ভ্রমনে যেতে চাইলে এ বইটি একটি গাইড হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করি।
হাবিব রহমান একজন অনিসন্ধিৎসু এবং অনেক বেশি পরিশ্রমী লেখক। তাঁর বইটি সমাদৃত হোক পাঠক মহলে। কৃতজ্ঞতা নাহিয়ানকে একজন গুনি লেখকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যে, যার লেখা আমাকে একটা নতুন দ্বারের সন্ধান দিলো।