কেমুসাস-এ মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ও আলোচনা সভা
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মার্চ ২০২৩, ১০:৪৮ মিনিটমহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সম্মাননাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুছ ছালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী গোলাম মর্তূজা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আফিজ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাইফুল হোসাইন। মুসলিম সাহিত্য সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহমেদ নূরের সভাপতিত্বে ২২শে মার্চ বুধবার বিকেলে শহিদ সোলেমান হলে অনুষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ও আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়। বাঙ্গালি জাতির মুক্তির পিছনে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় ভ‚মিকা। মুক্তিযুদ্ধ-বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাথা। এই স্বাধীনতার জন্য আমাদের অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে আমাদের এনে দিয়েছেন লাল সবুজ পতাকা আর একটি স্বাধীন দেশ।
সাহিত্য সংসদের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৩ উদযাপন পরিষদের সদস্যসচিব প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী ও সংসদের সাহিত্য ও গবেষনা সম্পাদক আহমদ মাহবুব ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। সভায় আলোচনায় অংশ নেন সাহিত্য সংসদের সহসভাপতি অধ্যক্ষ কালাম আজাদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়ফুল আলম রুহেল, লেখক-কলামিস্ট বেলাল আহমদ চৌধুরী, সাহিত্য সংসদের কোষাধ্যক্ষ মো. ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত, লাইব্রেরি সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ তাহের। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সংসদের কার্যকরী পরিষদ সদস্য ফায়জুর রহমান।
অনুভূতি ব্যক্তকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনে জীবন বাজি রেখে যারা যুদ্ধ করেছেন, তাদের অবদানের পাশাপাশি লেখক সাংবাদিক চিকিৎসকসহ সকল সেক্টরের বাঙালিদের অবদান রয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে হবে। আমরা যেমন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে শ্রদ্ধা করবো, তেমনি যাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ নেই তাদেরকে ঘৃণা করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, আমরা ভাগ্যবান জাতি বঙ্গবন্ধুর মতো মানুষকে আমরা নেতা হিসেবে পেয়েছি, যার ডাকে আমরা সাড়ে ৭ কোটি মানুষ এক পাল্লায় উঠেছি। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই, নতুন প্রজন্মের কাছে তার কীর্তি আরো উদ্ভাসিত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে পরিচালিত আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্র জীবন থেকে নিজের অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমার সৌভাগ্য আমি ৭ই মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে অবস্থান করে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেছি। তার ভাষণে উদ্দিপ্ত হয়েছি। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং আমার জীবনের বেদনাদায়ক অধ্যায় খুনি মোশতাক চক্রের হাতে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত। আজো আমি বুকে ব্যথা বয়ে চলি বঙ্গবন্ধুর জীবন রক্ষার জন্যে কোন অবদান রাখতে পারিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আফিজ আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছিলো, তাই আমরা আমাদের যার যা কিছু আছে তা নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাইফুল হোসাইন বলেন, বঞ্চনার অবসান ঘটাতে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম এবং আমরা সফল হয়েছি। এই সফলতা আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে।
সাহিত্য সংসদের সহসভাপতি অধ্যক্ষ কালাম আজাদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। নতুন প্রজন্মকে তাদের কাছ থেকে প্রকৃত ইতিহাস জানার মাধ্যমে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে দেশের জন্যে।
সভাপতির বক্তব্যে আহমেদ নূর বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সম্মাননা জানিয়ে আমরা নিজেরা সম্মানিত বোধ করছি। সবাই একথা স্বীকার করেন, আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের শ্রেষ্ঠ সময় মুক্তিযুদ্ধের কাল। আমাদের জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদেরকে শপথ নিতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে আমরা আমাদের দেশকে সামনে এগিয়ে নেব।