সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উফতিরপার গ্রামে সালিশের নামে দুই পরিবারের সদস্যদের গ্রামছাড়া করা হয়েছে। তিন বছর ধরে তারা বাড়ি ফিরতে পারছে না। এমনকি কেউ মারা গেলে দাফনেরও ব্যবস্থা করতে পারছে না পরিবার দুটি।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন উফতিরপার গ্রামের মৃত আব্দুস সত্তারের পুত্র ফারুক আহমদ। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় প্রভাবশালীদের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আমার চাচাতো ভাই আমীর আলী ও আমাদের গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের পুত্র খেলন মিয়ার পরিবারের সদস্যরা। গ্রামের কতিপয় প্রভাবশালী সালিশ বৈঠকের নামে তাদের গ্রাম ছাড়া করে। বিগত তিন বছর যাবত তাদেরকে চাষাবাদ জমিও চাষ করতে দিচ্ছে না ওই চক্র। তাদের মৎস্য খামারগুলোও ওই চক্র ক্ষতিসাধন করেছে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামে ফিরতে চাইলে তাদেরকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রাণ রক্ষার্থে ওই দুটি পরিবারের সদস্য সিলেট নগরে বসবাস করছেন।’
ফারুক আহমদ আরও অভিযোগ করেন, ‘সম্প্রতি আমাদের আত্মীয়, প্রবাসী সুজাত মিয়ার মা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে দেখতে যান আমার চাচাতো ভাই আমির আলী ও খেলন মিয়া এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এ খবর জানার পর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র সাইফুল ইসলাম ও মৃত রফিক উল্লাহর পুত্র এবং তাদের সহযোগী সন্ত্রাসীরা সুজাত মিয়ার মাকে গ্রামে দাফন করতে না দেওয়ার হুমকি দেন।’
তিনি জানান, কিছুদিন পর সুজাত মিয়ার মা মারা গেলে তাদের হুমকির কারণে তাকে সিলেটে দাফন করতে হয়। এদিকে ওই দুটি পরিবারের আত্মীয়-স্বজন তাদেরকে গ্রামে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলেও সাইফুল ও তার সহযোগীরা বাধা প্রদান করে।
ফারুক আরও জানান, গত ১২ মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের আত্মীয় নাছির নিহত হলে ওই চক্রের বাধার কারণে পার্শ্ববর্তী দুর্লভপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হয়। পরে, সালিশ ব্যক্তিদের সহযোগিতায় গ্রামে শিরনীর আয়োজন করতে ওই দুটি পরিবারের সদস্যরা গ্রামে যান। খবর পেয়ে সাইফুল গংরা ১৬ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বহিরাগত সন্ত্রাসী, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে তাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। আহতদের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু এ ঘটনায় উল্টো হামলাকারী সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে আহতদের আসামি করে মামলা দায়ের করে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনায় মধ্যস্থতা করতে আসা পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ও রায়বাঙালি গ্রামের রুম্মানকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় নিরীহ ও নির্যাতিত ওই দুটি পরিবারের সদস্যসহ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের হয়রানি করা হচ্ছে।’
ফারুক আহমদ অভিযোগ করেন, ‘যুক্তরাজ্য প্রবাসী, গ্রামের হানিফ উল্লার পুত্র আজিজুল হক, সুলেমান মিয়ার পুত্র চান মিয়া, বিছি মিয়ার পুত্র ছমির মিয়া ও শুকুর মিয়ার পুত্র আবু তাহেরের অর্থায়নে এবং মদদে সাইফুল ইসলাম ওই দুটি পরিবারের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছেন।’
নিরীহ দুই পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে বাড়িতে ফেরার সুযোগ করে দেওয়া এবং চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল, সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
অফিসঃ সিলেট সিটি সেন্টার, রুম- ৯০৬ (এ), ৯ম তলা,জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইলঃ ০১৭১১৩৩৪৬৪১, ০১৭৩০১২২০৫১
email : syfdianews@gmail.com