রাজা এলেন, ফিরে গেলেন ছড়িয়ে দিলেন উচ্ছ্বাস, আনন্দ
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৯:০৬ মিনিটতাইসির মাহমুদ :
বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে আগেই জানানো হয়েছিলো রাজার বাংলা টাউন দর্শন হবে এক ঘণ্টার। আসবেন সকাল ১১টায় । ফিরে যাবেন দুপুর ১২টায়। কিন্তু একেবারে কাটায় কাটায় ১১টায় যে এসে পৌঁছবেন তা হয়তো অনেকেই ভাবেননি।
৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার। ঘড়ির কাটা তখন ১১টার কাটায় ছুঁই ছুঁই। হঠাৎ একটি বেন্টলি কার এসে থামলো ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কের লাগোয়া রাস্তায়। মুহুর্তেই হর্ষধ্বনি ভেসে আসলো চারদিক থেকে। গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন বৃটেনের নতুন রাজা চার্লস ও তাঁর স্ত্রী কুইন কনসর্ট ক্যামিলা । পার্কের ভেতরে আগে থেকেই অভিবাদন জানাতে অপেক্ষারত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার শাফি আহমদ ও বারার ডেপুটি লেফটেন্যান্ট ড. আব্দুল বারি এমবিই। ভেতরে ঢুকেই তাঁদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করলেন।
এরপর সামনের দিকে এগিয়ে হ্যান্ডশেক করলেন ‘বিবিপিআই’র ফাউন্ডার ট্রাস্টি আয়শা কুরেশী, কাউন্সিলার আবদাল উল্লাহ, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র মাইয়ুম মিয়া সহ অন্যদের সঙ্গে।
এরপর তাঁর দৃষ্টি পড়লো পার্কের সীমানা প্রাচীরের বাইরে হোয়াইটচ্যাপেল রোডের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা উৎসুক জনতার দিকে। সীমানা প্রাচীরের এপাশে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডশেক করতে থাকলেন জনতার সাথে। প্রায় এক মিনিট সময় দাঁড়িয়ে-নুয়ে নিজের সঙ্গে ছবি তুলতে দিলেন তাদেরকে ।
ফিরে এসে হ্যান্ডশেক করতে থাকলেন অপেক্ষমান কমিউনিটির বিভিন্ন-স্তরের মানুষের সাথে । কেউ কাউন্সিলার, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ সাংবাদিক। রাজা করমর্দন করছেন আর জানতে চাচ্ছেন- “আপনি কী করেন, আপনি কী করেন”। এই ফাঁকে রাজাকে পাশে রেখে ঐতিহাসিক মুহুর্তকে মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন অনেকেই ।
এরপর হেঁটে হেঁটে চলে গেলেন আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনার চত্তরে। কথা বললেন অপেক্ষমান অতিথিদের সাথে। শহীদ মিনারের সম্মুখভাবে ‘এলম ট্রি’র একটি চারা রোপণ করলেন।
আধঘণ্টার মধ্যেই বেরিয়ে পড়লেন আলতাব আলী পার্ক থেকে । বাইরে অপেক্ষমান বেন্টলী গাড়িতে চড়লেন। সেখান থেকে গাড়িতে চড়ে অসবর্ণ স্ট্রিট হয়ে ব্রিকলেনের প্রবেশমুখ বাংলা টাউন গেইটের সম্মুখে নামলেন । সেখানে বাংলাদেশ হাইকমিশনারসহ অন্যরা রাজাকে অভিবাদন জানালেন। এরপর ব্রিকলেনর দু’ধারে স্কুলছাত্র আর উৎসুক মানুষের অভিবাদনে সিক্ত হয়ে এগিয়ে চললেন সামনের দিকে । মিনিট দু’য়েক হেঁটে ঢুকলেন বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘গ্রাম বাংলা’ রেস্টুরেন্টে । সেখান থেকে যাত্রা করলেন ব্রিকলেন মসজিদে। কথা বললেন, ধর্মীয় নেতাদের সাথে।
এরপর ফিরে এলেন বাংলা টাউন গেইটে অপেক্ষমান তার গাড়িতে । অসবর্ণ স্ট্রিট হয়ে হোয়াটচ্যাপেল রোড ধরে গাড়িটি ছূটলো বাকিংহ্যাম প্রসাদের দিকে। পেছনে রেখে যাওয়া উৎসুক জনতার উচ্ছ্বাস হৈচৈ ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকলো। রাজা এলেন, চলে গেলেন। আসা-যাওয়ার এই ক্ষণটি টাওয়ার হ্যামলেটসবাসীর জন্য ইতিহাস হয়ে থাকলো।
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩