মানহা হাসপাতাল থেকে তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরে আসতে চায়
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৯:৫৬ মিনিট
মাহমুদ রাহমান :
ডিসেম্বরের শেষ দিনগুলো ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম সময়। পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জীবনে প্রথম ক্বাবা শরীফ দেখা, খানায়ে ক্বাবাকে সামনে নিয়ে আল্লাহকে সেজদা করার সৌভাগ্য হয়েছিল এই সময়। আল্লাহ দাওয়াত দিলে হয়তো ভবিষ্যতে বার বার তওয়াফের সুযোগ পেতে পারি। কিন্তু পরিবারের সবাইকে নিয়ে আবার তওয়াফের সৌভাগ্য আর কখনও হবে কি-না তা আল্লাহই ভালো জানেন।
প্রথম তাওয়াফের সময় আমার ডানহাতে ছিল ছোট মেয়ে মানহার হাত। বামদিকে পবিত্র ক্বাবা, সামনে আম্মা- দুই হাতে তাঁর নাতি-নাতনি, রিফাত-মুনতাহা দুজনকে ধরে তওয়াফ করছেন। মানহা জোরে জোরে তালবিয়া পাঠ করছে। তার কচি গলায় ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…’ শুনে চারপাশের তাওয়াফকারীরা একনজর তার দিকে তাকাচ্ছেন। কেউ কেউ ভিডিও করে নিয়েছেন। সত্যিই চমৎকার ছিল এ দৃশ্য!
সফর শেষে জানুয়ারীর ৬ তারিখ যখন মিশিগানে ফিরি তখন মানহার গলায় আর তালবিয়া পাঠের মতো জোর নেই। জ্বরে মাথা তুলতে পারছিল না। ডাক্তার পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে বললেন, ফ্লু এবং নিউমোনিয়া হয়েছে মানহার। সঙ্গে ডিহাইড্রেশন এবং হার্টবিট বেশি। তাই হাসপাতালই এখন মানহার বাসস্থান।
মিশিগানের আরেকটি হাসপাতালে মানহার নানীও (আমার শাশুড়ি) শুয়ে আছেন। অন্যান্য জটিলতার সঙ্গে মানহার নানীরও নিউমোনিয়া বলে ডাক্তারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
দেশে সিলেট শহরের একটি ক্লিনিকে মানহার ছোট দাদাও (আমার ছোট চাচা মাওলানা নুরুল ইসলাম) বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে চিকিৎসারত। মানহার ছোট দাদার শরীরে পটাশিয়াম দেয়া হয়েছে। এখন রক্ত দেয়া হচ্ছে। মানহারও পটাশিয়াম ঘাটতি ছিল। এখন অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে।
এদিকে মানহার দাদী আজ সৌদি আরবের সফর শেষ করে দূর্বল শরীর নিয়ে দেশের পথে রওয়ানা হয়েছেন। আবহাওয়া প্রতিকূল। সময়মতো নিরাপদে দেশে পৌঁছা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। মানহার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরতে কয়দিন লাগবে জানিনা। কবে মানহা আবার আগের মতো বাবা বাবা বলে কথার পিঠে কথা বলতে বলতে অস্থির করে তুলবে তাও অজানা।
আমাদের এই অসহায়ত্ব নিয়ে মহান মা’বুদের বিশালত্বের সামনে অবনত মস্তকে সবার সুস্থতা ভিক্ষা চাচ্ছি। আপনাদের প্রার্থনায়ও আমাদের স্মরণে রাখার অনুরোধ রইলো।
জানুয়ারী ৯, ২০২৩
মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র।