বিলেতের ব্রিকলেনে বুক ক্লাব
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:২৫ মিনিটতাইসির মাহমুদ :
বয়স প্রায় সত্তরের কাছাকাছি। তবে এখনও পুরোমাত্রায় উদ্যমী । চাকরি জীবন শেষ করে অবসর নিয়েছেন অনেক আগে । ছেলে মেয়েরাও বড় হয়ে গেছে। সংসারে এখন আর কোনো পিছুটান নেই। তাই পুরোদমে মনোনিবেশ করেছেন বইপড়ায় মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করতে।
তৃতীয়বাংলা খ্যাত বিলেতের ব্রিকলেনে গড়ে তুলেছেন বুক ক্লাব। লেখকরা বই এনে দিচ্ছেন। পাঠকরা নিয়ে যাচ্ছেন । কেউ বসে বসে পড়ছেন । চা খাচ্ছেন। গল্পে গল্পে সময় কাটাচ্ছেন।তিনি নিজেও ক্লাবে দিয়েছেন প্রায় ৫ হাজার বই।
তবে তাঁর এই বই প্রেম নতুন নয় । ছাত্রজীবন থেকেই বইয়ের প্রতি তিনি আসক্ত। লাইব্রেরীতে না গেলে রাতে ভালো ঘুম হতো না। দেশের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পশ্চিমভাগ গ্রামে। গ্রামের বাড়িতেও তিনি গড়ে তুলেছেন লাইব্রেরী।
সম্প্রতি দেখতে গিয়েছিলাম লন্ডন বুক ক্লাব । তিনি আমাকে ক্লাবটি ঘুরে দেখালেন। এই বুক ক্লাব কীভাবে সাজাবেন, কিভাব এটিকে দীর্ঘস্থায়ী করা যায়- সেসব বিষয়ে বেশ উৎসাহব্যাঞ্জক কথা শুনালেন।
শুধু বইই নয়, সংবাদপত্রের প্রতিও তার অগাধ ভালোবাসা। শুক্রবারে ব্রিকলেন জামে মসজিদে নামাজ পড়েন। সেখানে মুসল্লিদের জন্য বিলিকৃত বাংলা পত্রিকাগুলো তিনি সুন্দর করে সাজিয়ে রাখেন। একটি পত্রিকাও কোনো কারণে নষ্ট হতে দেখলে আমাদেরকে ফোন করে জানান।
বলছিলাম বইপ্রেমি একে এম জিল্লুর রহমান জিলানীর কথা। গত কয়েক মাস হয় আমাদের লন্ডন প্রেস ক্লাবের পাশঘেষে দর্পন মিডিয়া কার্যালয়ে গড়ে তুলেছেন এই ক্লাব । এতে সহযোগিতা করছেন দর্পণ মিডিয়ার কর্ণধার সাংবাদিক ও মানবাধিকারনেতা রহমত আলী । থাকেন সুদুর কেন্টের চিজিলহার্স্টে। সেখান থেকে বাসে, ট্রেনে ও পায়ে হেঁটে ১২ মাইল পথ মড়িয়ে প্রায় প্রতিদিনই আসেন বুক ক্লাবে। কোনো ব্যক্তি স্বার্থে নয়। বইয়ের প্রেমে, বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে।
মুল উদ্দশ্য বই পড়তে মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করা । বইপড়া জারি রাখা। সোশ্যাল মিডিয়ার তাণ্ডব থেকে বই পাঠকদের রক্ষা করত।
আসুন, আমরা বইপড়ার অভ্যেস গড়ে তুলি। নিজে বই পড়ি, অপরকে বই পড়তে উদ্ধুদ্ধ করি। শিশু সন্তানদের সুন্দর সুন্দর বই কিনে দিই । বইয়ে প্রকৃত জ্ঞান । বইপড়া মানুষকে চিন্তার খোরাক যোগায় ।
জনাব রহমান জিলানীর প্রতি অনেক শুভকামনা। আপনার চেষ্টা সফল হোক।