দাগ
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ অক্টোবর ২০২২, ৯:৫৭ মিনিটআনোয়ার হোসেন মিছবাহ্
নিমুগ্ধ রাত্রিতে আজ আকাশের শরীরে খাবলা মেরেছে কেউ।আকাশ জুড়ে আজ লাল লাল নখের আঁচড়।ক্ষণে ক্ষণে ডেকে চলেছে আকাশের মেঘ।তবুও বিদ্যুত ঝলকের মাঝে মাটি বৃষ্টি হীন।এমন দিনে ঘুম আসেনা।অথচ ঘুম রাত্রিতে কারো উঁকিঝুকি অশান্ত করে তোলে মন।এমন রাত্রিতে কেউ না কেউ চায় কাছের একজন যেনো বলে উঠে আমি আছি,তোমার কাছাকাছি।আর এ রকম ভাবনায় শিখার কথাই মনে পড়ে সাগরের।সমহারী গড়ন।টিকালো নাক।চকচকে আংটি পাথর দাঁত।বিদ্যায় গরিয়সী।চলায় আধুনিক।বলায় মনোহারি। লেখায় চলোচঞ্চল।সংস্কৃতি বাহুডোরা।অনন্যা শিখাকে কেনো জানি খুব ভালো লাগে তার।
বন্ধুর গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানটিই ছিলো তার জন্য আশীর্বাদ। এদিন শিখা গাইছিলো আর কেনো জানি চোখ খুটে খুটে পরখ করছিলো সাগরের মন।সেখান থেকে চার চোখের সঙ্গমে অনন্য গান বেরিয়েছিলো শিখার গলায়।এই মুহূর্তে মনটাও চায় এরকম মনোহারি গলায় যাক না ডেকে- হ্যালো,হ্যালো,হ্যালো…!
তাই মোবাইলটি হাতে নেয় সাগর।কিন্তু হঠাৎ করে কি ই বা বলা যায়? তার মনে পড়ে যায় তম্বির দেওয়া টিকিটের কথা।শার্টের পকেটে হাত দিয়েই চিৎকার করে বলে ইউরেকা! দুটি টিকিটে দুইজন অনায়াসেই যাওয়া যায়।
-হ্যালো,আমি সাগর বলছি।আপনি শিখা বলছেন?
-জি,হঠাৎ ফোন করলেন যে?
-ফোন করার জন্য নম্বর কিন্তু আপনিই দিয়েছিলেন।
এবার পেটভরে হাসি আসে শিখার।
-না,মানে…ইয়ে…বলেই হাসিতে ঝড় আনে শিখা।
তার হাসি যেনো আকাশের সাথেই মিলে যায়।সাগরের কাছে মনে হয়-ঝরে যায়,পড়ে যায় সব কিছু সব।প্রাণে বান ডাকা হাসি বেশ লাগে সাগরের। তাই শিখার সাথে সাগরও হাসিতে নিজেকে মেলায়।
– কী ঘুমিয়ে ছিলেন?ডিস্টার্ভ করলাম না তো?
-কই না তো,ঘুমুতে যাচ্ছিলাম আর কী।
-এবার বলুন হঠাৎ স্মরণ করলেন যে?
-ঘুম আসছিলো না তা ই।
-ওমা,তা ই?আমারওতো আসছিলো না।কেনো জানি কারো একজনের কথা মনে হচ্ছিলো।ঝড়ের রাত্রিতে যা হয়।
-সে ই সৌভাগ্যজন কে,জানতে পারি?অবশ্য যদি আপত্তি না থাকে…!
-ছিঃ! ওসব মুখে বলতে হয় না কি? আমি কিন্তু বলতে পারবো না।
-কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।বুঝে নিলাম।মুক্ত করে দিলাম মনের বলাকা।
-কেনো?মুক্ত করলেন কেনো?আমিতো ভেবেছি ধরেছেন।সে যাক গে হঠাৎ ফোন পাওয়ার হেতুটা জানতে পারি?
-নিশ্চয়ই জানেন,কাল একটি বিকাল বসবে সাস্ট এর খোলা মাঠে।ক্লাসিক্যাল গুরু নিয়াজ আসছেন।আসুন না,বসে বসে শোনা হোক নিয়াজের গান।ঐ যে-
“জীবনানন্দ হয়ে সংসারে আজো আমি
সব কিছু ভুলে যেন করি লেন দেন
তুমিওতো বেশ আছো,ভালোই আছো
কবিতায় পড়া সেই বনলতা সেন!!
টানা টান চোখে কালি পড়েনি কোন
হাসলেও গালে টোল পড়ে এখনো
কি জাদু জানো তা বিধাতা জানেন
কবিতায় পড়া সেই বনলতা সেন!!
পরিপাটি বেশবাস তেমনি আছে
ঘটনার কোন রেশ নেই তো কাছে
এভাবে সবাই কি থাকতে পারে,
কবিতায় পড়া সেই বনলতা সেন!!”
গানটি এক নিঃশ্বাসে শেষ করেই সাগর শোনায়
-ঠিকঠাক তিনটায়।আসবেন কিন্তু।
-ও মা!এ কি!এই গানটিতো আমিও ফাংশানে গাই।বেশ শুনালেন কিন্তু।বাহ!আপনার গানের গলা বেশ।আমি মুগ্ধ।আপনার আরেকটি প্রতিভা জানা গেলো।
-আপনি কিন্তু বাড়িয়ে বলছেন।আমি মুখ লোকাচ্ছি…
-লজ্জা পাওয়ার কি আছে?যা সত্যি তা ই বললাম।
-তা-ই? ধন্যবাদ।
-বাদ দেন পামের কথা।এবার আসল কথায় আসুন।
-নিয়াজ আসছেন ভালো কথা,আপনি আসছেন তো?
আপনি থাকলে আসতে পারি সাগর।
আবার সেই হাসি।এবার যেনো সাগরের বুকেই আছড়ে পড়ছে সামুদ্রিক ঝড়।
-থাকবো বলেই ত আসতে বলেছি শিখা।
শিখা ভাবতেই পারছে না এমন আঁড়ালেপনা মানুষটাও খাঁচার দোয়ার খুলে দিয়ে আমন্ত্রনইবা দিচ্ছে কেনো।এমনটাও গত নিদান কালেও হয়ে ওঠে নি।যে দিন থেকে সাগরের সাথে পরিচয় সে দিন থেকেই শিখার কাছে মনে হতো-সাগর এক গুরুগম্ভীর মানুষ।মাছ খায়-উল্টোতে জানে না।চোখের ওপর চোখ পড়লেই সরিয়ে নেয়।আবার আঁড়ালে শিখার চোখ পড়ে নেয়।সে কি না আজ শিখাকে কাছে ডাকে।
পরের দিন ঠিক তিনটায় হাজিরা দিলো শিখা।কিন্তু এ কি! যেখানে গান শোনার কথা সেখানে চষে বেড়াচ্ছে গরু।যেখানে মাঠ উপচানো দর্শক থাকার কথা সেখানে নব পানিতে আনন্দে মেতে আছে পুষা পাতি হাঁস।স্টেজের কোন নাম নিশানা নেই।শিখার চোখ অপার শূণ্যতায় পাক খেতে থাকে।রাগ হয় শিখার।দূ র ছাই!কী থেকে কী শুনেছি…দেখি ফোন করে।মুঠোফোনটি হাতে নিয়ে ফোন দেয়-
-হ্যালো,কোথায় আপনি?
না।হ্যালো শব্দটি বাতাসে পৌঁছার আগেই লুফে নেয় সাগর।বলে;
-আ রে! আপনি ঐখানে কেনো?দেখেননি রাতের বৃষ্টিতে থই থই মাঠ।ওখানে আর অনুষ্টান হবে না।অনিবার্য কারনে বন্ধ হয়েছে অনুষ্ঠান।কেনো,আজকের নিউজ পেপার পড়েন নি?
-না এখনো পড়া হয়নি।
-ও আচ্ছা,ঠিক আছে।তারচেয়ে চলে আসুন বালুচর শিল্পকলায় বসি।আজ ওখানেও অনুষ্ঠান।বাউল গান। শিল্পীরা এসে গেছেন।চলে আসুন আমি গেট থেকেই রিসিপ করছি আপনাকে।
এবার সাগরের কথায় সায় দেওয়া ছাড়া শিখার পথ খোলা নেই।সাগরের আহবান বলে কথা!
শিল্পকলামুখি যেতে বলে নিজেকে রিক্সায় ছড়িয়ে দিয়ে শতভাবনায় গেট ভেড়া রিক্সা থেকেই শিখা দেখতে পায় অপেক্ষার পায়চারিতে সাগর।ঘাঢ় নীল জিন্স পেন্টের সাথে লাল টি শার্ট পরে গেটের এপার ওপারে বসিয়ে রেখেছে চোখের পাহারা-কবে মিস করে বসে শিখার আগমন।এবার একটু উঁকি দিতেই চোখে পড়ে -লাল পেড়ে সাদা শাড়ি।কপালে লাল টিপ একেবারে সাদাসিধা।সে আবিস্কার করে অন্য আরেক শিখাকে।এ যেনো সাগরের কাছে অন্যথা ব্যতিক্রম।গত পহেলা বৈশাখেতো এ রকম ছিলোনা শিখার শরীর।ছিলো জামা পায়জামার সাথে ম্যাচিং পোশাক।
-কি,এতোক্ষণে আসা হলো?চলুন সীট রাখা আছে। কী আর করা- সাগরের পিছু পিছু অগত্যাই হাঁটতে হয় শিখার।কিন্তু শিল্পকলায় ঢুকেই শরৎ আকাশে পুচ্ছ মেঘমল্লারের মতো উড়ে উড়ে পার হতে থাকলো শিখার রাগ বিকুলী।তার ধারনা ছিলো এসব বাউল গানে দর্শকশ্রোতার টান থাকে না বেশি।কিন্তু এ তো দেখি কানায় কানায় পরিপূর্ণ।মাথার উপরও দাঁড়িয়ে দর্শকের ঘাড় মাথা।
বাউলা গানে এমন মনোরম পরিবেশ আগে কোথাও দেখেছে বলে মনে হয়নি তার।গান গেয়ে চলেছেন বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের ভাবশিষ্য রুহীঠাকুর-
“বসন্ত বাতাসে সইগো
বসন্ত বাতাসে
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ
আমার বাড়ি আসে
বন্ধুর বাড়ির ফুলবাগানে
নানান রঙের ফুল
ফুলের গন্ধে মন আনন্দে
ভ্রমর হয় আকুল
বন্ধুর বাড়ির ফুলের বন
বাড়ির পূর্বধারে
সেথায় বসে বাজায় বাঁশী
মন নিল তার সুরে
মন নিল তার বাঁশীর তানে
রূপে নিল আঁখী
তাইতো পাগল আব্দুল করিম
আশায় চেয়ে থাকে।”
গান শুনে পাগলপারা মানুষ। ওয়ান মোর,ওয়ান মোর করে মাতিয়ে তুলেছে হল রোম।
এবার হলের ডানপাশের দুটি সীটে পাশাপাশি বসে দুজন।একজনের শরীরের ঘ্রাণ আরেকজনকে মোহবিষ্ট করে।আকূল করা যেনো বসন্ত বাতাসের সই! উড়ে উড়ে চুল পড়ে সাগরের চোখে মুখে। সাগর মনে মনে চোখ বুঝে ফ্যানকে বলে শাবাশ বেটা!তুই ছিলি বলেই খুঁজে খুঁজে তোর নিচে পাশাপাশি বসার সুযোগ পেয়েছি।তুমুল গরমের মাঝেও শীতল হতে পেরেছি।সুযোগ পেয়েছি তোর নিচেই সীট বেছে বসার।
এ রকম ভাবনার মাঝে হাঁসফাঁস গরমের মধ্যেও গন কোলাহলের কমতি নেই।সাগর হাততালি দিলে শিখা স্থির হয়ে যায়।শিখা সরব হলে সাগর নীরব।দুজনের বুকেই যেনো অজানা ঝড়।ঝড়ের আওয়াজ শুনে না কেউ।শুধু শুনে একলা করে দুজন।সাগর আর শিখা।শিখা আর সাগর। এবার দুজনের নিরবতা ভেদ করে কথা বলে সাগর-
-কী শিখা?ভাল্লাগে না?
-কেনো লাগবে না।খুউব।
এমন কথার মাঝখানে হাত ছুঁয়ে যায় শিখার।অনেকটা আৎকে ওঠে সাগর।যেনো জ্বলে ওঠে হাজার ভোল্টেজের আলোকবাতি!
নিজেকে শামলে নিয়ে শিখার হাতটি মুঠোর ভেতর নেয় সাগর। আলতো করে চাপতে থাকে যেনো প্যারালাইজড রুগীর ব্যায়ামের হাত!জ্বলতে থাকে শিখা।অনেক দিনের নেভানো আলোটাই যেনো জ্বালিয়ে দেয় সাগর।শিখার মাথা নির্ভরতা খুঁজে।আহা!বুকটা যদি পেতে দিতো সাগর! সে আলতো করে সাগরের বাম কাঁধে মাথাটি এলিয়ে দেয়।সাগর হলের নেভানো আলোয় আরো খানিকটা নির্ভর হয়ে ছোট্র একটি চুমু খায় শিখার উষ্ণ অথচ কামনার ঠোঁটে।কাঁপতে থাকে শিখা।কাঁপে সাগরের শরীর।
আজ ঠিক সন্ধ্যায় বের হলো দুজন।সাগর তার ব্যবহৃত ১৫০ সি সি পালসার বাইকটি১৫০ টাকায় ধুইয়ে রেখেছে বেরুবে বলে।গতরাত্রেই প্ল্যান করা ছিলো
দুজনের।তাদের কোন গন্তব্য নেই।শুধু লংড্রাইভ ছাড়া তেমন কোন কাজও নেই।আজ চায়।সাগর অনেক কিছুই চায়।শিখাও পায় জ্বলে জ্বলে ওঠার তাগিদ।এখন সাগরের চাওয়া উড়ে উড়ে পড়ে যাওয়া এলো চুলের হাওয়ায় বিনুনি করা মাথা।এ মাথা বড়ো আবেগের। বড়ো আদরের।শত কামনায় জড়ানো ভালোবাসার মাথা।সেমাথা হোক শিখার।শিখা জানুক,সে এলে আমি চাইনা আরো কোন কিছু!সাগর সুনসান রাস্তায় দূরন্ত হবে।কাঁধে বিছানো থাকবে শিখার পাতানো অপার নির্ভরতার মাথা।গত পহেলা বৈশাখ থেকেই এমন নির্ভরতা চায় সাগর। আজ তার মনোকামনায় ইতি হয়েছে-প্রীতি দিয়েছে প্রাণজ শিখা।সে তার প্রাণজ শিখাকে পেয়েছে।আজ তার চরম পাওয়ার দিন।তাই প্রিয় গানটিও গেয়ে যায়-
“চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে থেমে গেছে
আবার এলো যে সন্ধ্যা,শুধু দুজনে!!
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে থেমে গেছে!!
আবার এলো যে সন্ধ্যা,শুধু দু’জনে
ঝাঁউবনে হাওয়া গুলো খেলছে
সাওতালি মেয়েগুলো চলছে
লাল লাল শাড়ী গুলো উড়ছে
তার সাথে মন মন দুলছে
ঐ দূর আকাশের প্রান্তে
সাতরঙ্গা মেঘ গুলো উড়ছে!!
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে থেমে গেছে!!
এই বুঝি নেমে এলো সন্ধ্যা
ভেবে যায় কি জানি কি মনটা
পাখিগুলো নীড়ে ফিরে চলছে
গানে গানে কি যে কথা বলছে
ভাবি শুধু এখানেই থাকবো
ফিরে যেতে মন নাহি চাইছে!!
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে থেমে গেছে!!
আবার এলো যে সন্ধ্যা,শুধু দু’জনে!!”
সাগর গান গায়। শিখা গলা মেলায়।এ রকমই চলছে সাগরের ড্রাইভ।
এখন তারা রাত্রির ঘুটঘুটে অন্ধকারে হেড লাইটের আলোয় দেখে শুধু সামনের দূরন্ত পথ।টর্চের আলোয় বাড়ি ফেরা মানুষ আর ধানক্ষেত থেকে ওঠা শেয়ালের ভূঁ দৌঁড়!তাদের গন্তব্যহীন রাস্তায় শত শত গাছের সারি পেরিয়ে বিটুমিন রাস্তার উদরে দুইটি হৃদয় পরম স্বণির্ভর ছোটে চলে যেনো কোথাও থেকে শুনতে আরো নির্ভরতার মন্ত্রপাঠ-
“যদিদং হৃদয়ং তব তদিদং হৃদয়ং মম”
শিখা সাগরের পেট পেছিয়ে ধরে মনের আনন্দে গান গায়-
“সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে,ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা
সেই স্মৃতিটুকু কভুখনে খনে যেন জাগে মনে,ভুলো না!!
সেদিন বাতাসে ছিল তুমি জানো–আমারি মনের প্রলাপ জড়ানো,
আকাশে আকাশে আছিল ছড়ানো তোমার হাসির তুলনা!!
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমারাতে চাঁদ উঠেছিলো গগনে।
দেখা হয়েছিল তোমাতে আমাতে কী জানি কী মহা লগনে।
এখন আমার বেলা নাহি আর,বহিব একাকী বিরহের ভার–
বাঁধিনু যে রাখী পরানে তোমার সে রাখী খুলো না,খুলো না!!”
সাগর যতোই গানের দিকে মনোযোগ দিতে চায় ততোই ক্লাস-এ্যাক্সিলেটর থেকে মনোযোগ ছিটকে যায়।তবুও গান শুনে শুনে শিখার কন্ঠে কন্ঠ মিলায়।পথ চলতে চলতে বাইকের গতি বাড়ে।মিটারের কাঁটা ও পায়ের ব্র্যাক এর কথা ভুলে যায়।
শিখাকে পালসারে নিলে এমনটি হয় তার।উড়ু উড়ু মনে উড়ো কিস এ আনন্দের হিল্লোল খেলে তার মনে।আজও তার ব্যতিক্রম নয়।কিন্তু আজ কেনো জানি মনে হয় পাশ ফিরলেই লাইভ কিস খেতে পারে সে।শিখার থুতনিটা এমন জায়গায় রাখা,ইচ্ছে করলেই হয়।আর সেই ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিতেই ঘটে অনাকাঙ্খিত বিপত্তি!তুমুল আবেগে পাশ ফিরে যেই শিখার ঠোঁটে কিস খেতে যাবে-অমনি অসামাল হয়ে পড়ে বাইক ঠাস!ঝণ-ঝণাৎ!করে কয়েকটি শব্দ হয়।দুজন দুদিকে লুটিয়ে পড়ে।ছিটকে পড়তে থাকে সাগরের মগজ।রক্তের নহরে লালে লাল হয়ে যায় চারপাশ।
অন্যদিকে আইসিইউ তে ৭২ ঘন্টা পরে চোখ খুলে শিখা। ডাক্তার জাহাঙ্গীর বলেছিলেন ৭২ ঘন্টার মধ্যে কিছুই বলতে পারবেন না।শুধু বলতে পারবেন আপাততঃ ডান পা টি রাখা যাবে না।মাথায় প্রচুর হেমোরেজ এর ফলে রোগী সুস্থ হলেও কথা বলতে পারবে না।তা ছাড়া এ রকম রোগী বাঁচানোই মুশকিল!