কাজে ফেরানো গেল না চা শ্রমিকদের
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ আগস্ট ২০২২, ১১:৩০ মিনিটএম ইয়াকুব হাসান অন্তর হবিগনজ প্রতিনিধি।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রেখে কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানালেও শ্রমিকরা সেই অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছেন। তবে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে চা শ্রমিক নেতাদের দেখা যাচ্ছে না। আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেন, আমরা বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ডাকে আন্দোলনে নেমেছিলাম। তবে এখন আমরা তাদের সঙ্গে নেই। কারণ নেতারা আমাদের সঙ্গে বেইমানি করে ২৫ টাকা মজুরি বাড়ানোর প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। এখন প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে আমাদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার পর মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও হবিগঞ্জের শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরির দাবি থেকে পিছপা হননি।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) তারা ১৩তম দিনের কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে বুধবার চা শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করে জেলা প্রশাসক বলেন, প্র্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রেখে আপনারা কাজে যোগদান করুন। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আগামী দুর্গাপূজার আগেই আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং আপনাদের মজুরির বিষয়ে একটি ঘোষণা দেবেন। কিন্তু শ্রমিকরা এতে সাড়া দেয়নি।
চলমান আন্দোলনে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল উপস্থিত হচ্ছেন না। তিনি তিনদিন ধরে শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে দূরে রয়েছেন।
এর আগে সোম ও মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক বাগান পঞ্চায়েতদের নিয়ে বৈঠক করার পরও শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেননি। মঙ্গলবার বাগান পঞ্চায়েতদের নিয়ে আলোচনার পর শ্রমিকদের একাংশ কাজে যোগদানের কথা বলেও বুধবার কোনো বাগানের শ্রমিকরা কাজে যাননি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির ২৪টি বাগানের শ্রমিকরা স্থানে স্থানে বসে থেকে দিন পার করছেন। তাদের হাতে থাকা ফেস্টুন ও প্লে-কার্ডে লেখা ‘আটা রুটির সংগ্রাম চলছে, চলবে’, ‘শেখ হাসিনার সরকার, ৩০০ টাকা দরকার’সহ নানা ধরনের স্লোগান। বিভিন্ন প্লে-কার্ডে শ্রমিক নেতাদের দালাল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছেন চা শ্রমিকরা। মজুরি বাড়ানোর জন্য বাগান মালিক, মজুরি বোর্ড, চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়। এতে দৈনিক মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে শ্রমিকরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।