নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যক্তি মালিকানাধীন হিন্দু আলী পুকুর দখলের চেষ্টা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। সিসিক মেয়র এই পুকুর জনসাধারণের দাবি করে সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। এমন অভিযোগ করেছেন নগরের ওয়ার্ডের সৈয়দানীবাগ সৈয়দ বাড়ির বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সৈয়দ খালেদ হোসেন মাহতাব।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ‘গত ৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নির্দেশে সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা আমাদের মৌরসী মালিকানা হিন্দু আলী পুকুরে অনধিকার প্রবেশ করেন। কারণ জানতে চাইলে সিসিকের পরিচ্ছন্নতা সুপারভাইজার রশিদ মেয়রের নির্দেশে পরিচ্ছন্নতা কাজে লেগেছেন বলে দাবি করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতার কাজে লাগা লোকদের সঙ্গে আরও কয়েকজন যোগ দিয়ে আমাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আক্রমণের চেষ্টা করেন। তখন মেয়রের নির্দেশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করে আমাদের পুকুরে কাজ অব্যাহত রাখেন।’
সৈয়দ খালেদ হোসেন বলেন, ‘হিন্দু আলী পুকুর সৈয়দানী বাগ সৈয়দ বাড়ির বাসিন্দাদের মৌরসিী সম্পত্তি। আইনগতভাবে মৌরসি সম্পত্তির ওপর অন্য কারো হস্তক্ষেপ বেআইনি। সরকারও প্রয়োজনে ভূমি নিতে চাইলে তিনগুণ মূল্য দিয়ে অধিগ্রহণ করতে হয়।’
হিন্দু আলী পুকুর নিয়ে উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থা জারি রয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘ব্যক্তিমালিকানা হিন্দু আলী পুকুরে সিসিক কোনো প্রকার উন্নয়ন কাজ করতে পারে কি না- সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আদালতের স্থিতাবস্থা থাকা অবস্থায় সিসিকের হস্তক্ষেপ আদালত অমাননার শামিল।’
সৈয়দ মাহতাব বলেন, ‘প্রতিপক্ষ কবুলিয়তি লোকজনের দ্বারা বশ্যিভূত হয়ে আমাদের পূর্বপুরুষের মৌরসী সম্পত্তির অংশ হিন্দু আলী পুকুরটি আত্মসাৎ করার অসৎ উদ্দেশ্য সিসিক মেয়রের রয়েছে। আমাদের ধারণা, তিনি ভূমিখেকোদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিপক্ষের হয়ে পুকুর দখল করতে নেমেছেন।’
সৈয়দ মাহতাব আরও বলেন, ‘পুকুরের অন্যতম রেকর্ডিও মালিক মোছা. আছক বানুর মেয়ে মোছা. আমিনা খাতুনদের (স্বামী-সফিকুল হক চৌধুরী) কাছ থেকে সৈয়দ আজিজুল হোসেন গং রেজিস্ট্রারি দলিলে খরিদ করেন। মোছা. আমিনা খাতুন বর্তমান সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মা।’
তিনি দাবি করেন,‘এই সৈয়দানীবাগ হিন্দু আলী পুকুরটি পূর্বসূরীদের আমল থেকে সৈয়দ মৎস্য খামার হিসেবে মৎস্য চাষ করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪-৭৫ খ্রিস্টাব্দে পুকুরটি সংস্কার করা হয়। সংস্কারকালে পুকুরের মাটি সৈয়দ আজিজুল হোসেন উপশহর গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করেন। পরবর্তী সময়ে সৈয়দ নুরুল হোসেনের ক্রমিক উত্তরাধিকারী সৈয়দ নাহিদ রহমান সাব্বির গং ও সৈয়দ খাদিম হোসেনের উত্তরাধিকারী সৈয়দ তাজিদুল হোসেন বাবুল গং পুকুরটি বংশ পরম্পরায় ভোগ দখল ও মৎস্য চাষ করে আসছেন।’
সৈয়দ মাহতাব বলেন, ‘২০০৯ সালের ২৬ মার্চ জোর করে জনগণের পুকুর নামীয় সাইনবোর্ড বসাতে চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষের লোকদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে সৈয়দ আজিজুল হোসেনকে তারা রক্তাক্ত জখম করলে থানায় মামলা দায়ের করেন। জয়নাল গংরা যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা দায়ের করেন। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে আদালত তা খারিজ করে দেন।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ নাহিদ রহমান (সাব্বির), সৈয়দ আনোয়ার হোসেন জুবেল, সৈয়দ রাহাদ হোসেন, সৈয়দ আতাউর হোসেন (সাবুল), কামাল মিয়া, মো. আব্দুল ওয়াহিদ (জাবেদ), আব্দুল হালিম (দোলন), মো. মজনুর রহমান, আব্দুল সত্তার, মাহমুদ ইয়াসিন, মুশফিকুর রহমান, শেখ আব্দুল মতিন, মারুফ আহমদ, সাইফুর রহমান ইমন, রেজাউল করিম রাব্বি, মো. হাবিবুর রহমান, সৈয়দ আশরাফ হোসেন, সৈয়দ তারেক হোসেন, সৈয়দ আফজাল হোসেন, মো. তুলা খাঁ, সৈয়দ ফজিলত হোসেন, মো. ফারুক আহমদ, সৈয়দা ফাহমিদা হোসেন, আব্দুল আহাদ, শিমুল আহমদ, রুমেল খান, মো. হোসেইন ও রাহাদ আহমদ।
সম্পাদকঃ আব্দুল বাতিন ফয়সল, সহ-সম্পাদকঃ আব্দুল মুহিত দিদার
অফিসঃ সিলেট সিটি সেন্টার, রুম- ৯০৬ (এ), ৯ম তলা,জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইলঃ ০১৭১১৩৩৪৬৪১, ০১৭৩০১২২০৫১
email : syfdianews@gmail.com