কানাডায় টরেন্টো বইমেলা
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ আগস্ট ২০২২, ১০:৫৬ মিনিট
জুয়েল সাদত:
কানাডায় চতুর্থ দিন ( ৬ আগষ্ট) শনিবার
দিনটা ছিল অসম্ভব ব্যাস্ততার, ৭ তারিখ চলে যাব তাই,, অনেক ইভেন্ট। সকালেই পরম আত্বীয় মাহবুব ভাই আমাকে পিক আপ করে নিয়ে যান বাসায় ব্রেকফাস্ট করাতে। স্কারবরোতে উনার বাসায়। নাস্তা মনে হয়নি, এটা একটা লাঞ্চ এর আয়োজন। আমার সামনে সবাই দাড়ানো আমি খাচ্ছি, খালাম্মা/ ভাবী/ ভাইয়া সবাই আমাকে জোর করছেন। কি আর করা খেতেই হবে। খালাম্মার চম্যকার বাগানবাড়ি। মাহবুব ভাই, জুমার নামাজে গিয়ে আমাকে পেয়েছিলেন।, তিনি জানতেন আমি মসজিদ আল আবেদীন থাকব।
স্বপন ভাই, আমাকে দেড়টায় পিক আপ করেন। তারপর আমরা Ajax veteran Park এ যাই। সিলেট মেডিকেল কলেজের সাবেক ডাক্তার দের সংগঠন এর পিকনিকে। পুরো তিনঘণ্টা আমরা সেখানে ছিলাম। স্বনামধন্য সিনিয়র ডাক্তার শামিম, ডাক্তার সাদুল্লাহ সহ অনেকেই। চম্যকার গোছানো পিকনিক, টরোন্টো তে সিলেট মেডিকেল এর সাবেক ডাক্তার, তারা কেউ এই প্রফেশনে নাই। সম্ভব ও না, অনেক কঠিন কানাডায় ডাক্তারি করা। সবাই নানা বিজনেস ও চাকুরীজীবি। আমি তাদের সাথে বেগম পাড়া নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করি।। নানা কথাবার্তা হয়। বন্ধু তাহমিনা আমাকে নিয়ে আরো দুটো অনুষ্টানে যাবে, তাড়া দিচ্ছিল বারবার। সাড়ে ৬ টায় আমরা ফিরে আসি।। তাহমিনা সাড়ে সাতটায় আমাকে পিক আপ করে টরেন্টো বই মেলায় নিয়ে যায়। তাহমিনার গল্প আরেকদিন বলব।। চম্যকার মানুষ, টরেন্টো বইমেলায় যাই। অনেকেই পরিচিত। কবি আসাদ চৌ এর ছেলে সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব বন্ধু আসিফ এর সাথে ১৮ বছর পর দেখা। বইমেলায় একটা দেশীয় আমেজ। সবাই শাড়ী পাঞ্জাবী পরেছেন। অনেকগুলো বইয়ের স্টল। সব বইগুলোর স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম।। অনেকেই অনেক বই দিলেন। নাতিদীর্ঘ আলোচনা হচ্ছে, শ্রোতারা ছবি তুলায় ব্যাস্ত, জসিম মল্লিক কথা বলছেন, কেউ শুনছে না । সবাই সেলফি ও আড্ডায় ব্যাস্ত। আমাকেও বলা হল, বিনয়ের সাথে না করলাম। আমাকে আরো একটি বড় ডিনারে যেতে হবে। হাতে সময় কম, তাহমিনা তাড়া দিচ্ছিল। বাফেলো থেকে শাম্মী এসেছেন,বই দিবেন দিবেন করে দৌদুল্যমান, আমারও নানা তাড়া ছিল। বেশ কিছু সময় আডৃ্ডা মারলাম।। সিলেটের অনেকের সাথে পরিচয় হল। বেশ চম্যকার গোছালো বইমেলা, অনেক টরোন্টো প্রবাসী লেখকের বই দেখলাম। ১৬ তম বইমেলা উপলক্ষে একটি সুভেনির দিলেন আয়োজকরা।। আন্তরিকতা র কমতি ছিল না।। ভাল লাগল, আমরা ভেতরে বাহিরে অনেক আড্ডা দিলাম। তাহমিনা কিছু গিফট করবেন, বললাম ‘একাত্তর এর যুদ্ব শিশু” বইটা দাও।। একটি ঐতিহাসিক বইটি লেখক অটোগ্রাফ সহ পেলাম।
সেখান থেকে তাহমিনা নিয়ে গেল আমাদের” টরোন্টো সারাবাংলা ৯০ ” এর একটি বিশাল গেটটুগেদারে। অনাহিতা দম্পতি র বাসায়। অনাহিতার বাসায় আলিশান আয়োজন। আমাকে দেখে সবাই খুশি। আমাকে সবাই চিনেন। একটি ঘোর লাগা সময়। ওয়ার্ম রিসেপশন পেলাম। পুরো টরেন্টো ট্যুরটার সার্থকতা সারাবাংলার বন্ধুরা। ৪৫ টি বন্ধু, অনেক গুলো আবার জোড়া। মানে স্বামী স্ত্রী দুজনই আমাদের সারাবাংলা র সূদস্য। কানাডার এডমিন অনাহিতা ও কাওসার। ফেরদৌসি, বনানী,লিজি, বিপ্লব কত নাম লিখব। আমাকে পেয়ে সবাই খুশি আমারও ভাল লাগছিল। অনাহিতার বাসা ও ব্যাকইয়ারড টা হয়ে উঠেছিল এক আনন্দঘন সময়ের ইতিহাস। তাহমিনা ছিল সব সময় পাশে।। সারা বাংলাদেশের নানা জেলা শহরের বন্ধুদের আমাদের এই একত্রিত হবার সুযোগ সারা বছরই ঘটে। এডমিন কাওসার বলছিল, কিভাবে সে সময় বের করে কঠিন কাজটা করে।। ছবি তুলার, সুন্দর সময়টা ধরে রাখার প্রতিযোগিতা।। বিমান বাহিনীর সাবেক অফিসার লিজির গল্প শুনলাম। ব্যাংক এশিয়ার বিপ্লব সিলেটের গল্প করল। চম্যকার করে ঘন্টা দুয়েক চলে গেল। অনাহিতা অনেক যত্ন করে খাওয়ালো আমাদের, বাসাটাও মাশাল্লাহ দেড় / দুই মিলিয়নের, দেখার মত।
ফ্লোরিডার সবচেয়ে দুরের বন্ধু হওয়াতে সবাই একটু বেশী ট্রিট দিল। অনেক বন্ধু, বিকেল থেকে অনেকে এসেছেন গেছেন, সামারের শেষ দিকের ব্যাস্ত শনিবার ছিল। সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ থাকার একটি বাড়তি সুবিধা।
রাত সাড়ে ১১ টায় বাসায় ফিরলাম।
৪ দিনের টরেন্টো সফরের সমাপনি হল, রোববার ৭ আগষ্ট তারিখ সকাল বাফেলোতে যাব।
চলবে