দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই- আবু রায়হান
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০২২, ৯:১২ মিনিটপুরো বিশ্ব যখন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও তার ব্যতিক্রম নয়,
কারিগরি শিক্ষা হলো হাতে কলমে শিক্ষা এর মুল লক্ষ্য হলো অদক্ষ্য জনসমষ্টি কে দক্ষ করে জন সম্পদে রুপান্তর করা এমনকী দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে মুখ্য ভুমিকা রাখা-ই হলো কারিগরি শিক্ষা’র মুল উদ্দেশ্য
আমরা যদি বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোর দিকে তাকাই তাহলে একটা বিষয় বিশেষ ভাবে লক্ষ্য নিও সে দেশের কারিগরি শিক্ষার হার যে দেশ যতো বেশি উন্নত সে দেশে কারিগরি শিক্ষা হার ততো বেশি।
কারিগরি শিক্ষার হারে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। আমাদের মাত্র ১৪% শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছে যেখানে বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার হার জার্মানিতে ৭৩ শতাংশ, জাপান ৬৬ শতাংশ, সিঙ্গাপুর ৬৫ শতাংশ, অষ্ট্রেলিয়া ৬০ শতাংশ, চীন ৫৫ শতাংশ,দক্ষিণ কোরিয়া ৫০ শতাংশ, মালেশিয়া ৪৬ শতাংশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ‘কুদরত-ই খুদা’ শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। যদিও ১৯৭৫ সালের পরবর্তী প্রেক্ষাপটে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। অতঃপর পরবর্তী তে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই কারিগরি শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ ও খসড়া শিক্ষা আইন-২০১৬’ প্রণয়ণ চূড়ান্ত করেন। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে একটি র্দীঘ ময়োদী লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছে যা ২০২০ সালে ২০% , ২০৩০ সালে ৩০% এবং ২০৫০ সাল নাগাদ কারিগরি শিক্ষার হার ৫০% এ উন্নীত করার এই লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে বাংলাদশে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
তারই ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশে ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক এবং ৪ টি সরকারি মহিলা পলিটেকনিক স্থাপিত হয়েছে এছাড়াও ৬৪ টি জেলায় রয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ।জাতীয় উন্নয়নের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হলো দক্ষ জনশক্তি। আর জনগণকে জনশক্তিতে রূপান্তরের অন্যতম মাধ্যমে হলো কারিগরি শিক্ষা। এই শিক্ষা সাধারণ শিক্ষার বাইরে শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তি নির্ভর, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণদানসহ নানা আত্মকর্মসংস্থানমূলক জ্ঞানার্জনে সাহায্য করে থাকে।
দক্ষতাই আধুনিকতার পরিচায়ক এটা বলার অপেক্ষা রাখ না । দক্ষতাবিহীন কর্ম নিষ্প্রয়োজন। আর আধুনিক বিশ্ব হলো প্রযুক্তিনির্ভর। এখানে দক্ষতা ব্যতীত উন্নয়নের চিন্তা নিরর্থক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নবতর আবিষ্কারের ফলে বিশ্বজুড়ে উন্নয়ন কৌশল ও পদ্ধতির দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রতিনিয়তই খুবই সচেষ্টরূপে বহির্বিশ্বে বাণিজ্য, যোগাযোগ, পরিবহন ও জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে অসম প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। তাই কারিগরি শিক্ষার প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে আরো গুরুত্ব আরোপ করতে হবে! এছাড়াও দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন কিংবা চতুর্থ বিপ্লব তথা ডিজিটাল বৈপ্লবিক পরিবর্তনে কারিগরি শিক্ষাই পারে সামনে থেকে মোকাবেলা করতে।
লেখক- আবু রায়হান
শিক্ষার্থী,
ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ