একটি ওয়ার্ড ড্রয়ার ও ভালোবাসা
সিলেট এক্সপ্রেস
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জুলাই ২০২২, ৪:৫৯ মিনিটতাসলিমা খানম বীথি :

আম্মা আব্বাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে নিজেই সারপ্রাইজ হলাম। কেন জানেন? মানুষের কল্যাণে আন্তরিক হয়ে কাজ করেন সেটিও রির্টান পাবেনই। হসপিটালে ডিউটি শেষে গত সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম আম্মা আব্বার জন্য ওয়ার্ড ড্রয়ার কিনতে। প্রথম দোকানে যেতেই লোকটি আমাকে দেখে সালাম দিয়ে বীথি আপু-কেমন আছেন। অবাক হতাম না যদি সাংবাদিক বা সাহিত্যিক কেউ হতেন। অবাক হলাম ফার্নিচার লোকটি আমাকে চিনে। চিনতে না পারায় বললেন-ফ্রিডম হসপিটালে উনার মা ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট নিয়েছিল। তার মা বেচে নেই তবে আমাদের সেবাকে তিনি মনে রেখেছেন। আমাদের হসপিটালে সার্ভিসে প্রশাংসা করলেন। বসেন আপু- চা , কফি না ঠান্ডা খাবেন তাকে বলি কিছুই না আমাকে ওয়ার্ডড্রয়ার দেখান। লোকটি বিভিন্ন কালার ও ডিজাইন দেখা, তবে দাম বেশি। দাম কমায়ে দেবে বলছে। ঠিক আছে বলে- অন্য দোকানে দেখে আসব বলি। পরে কয়েকটি দোকান দেখার পর আরেক দোকানী আমাকে চিনে ফেলল-আরে ফ্রিডম হসপিটালে-বীথি আপু। আমি বলি আপনিও রোগি ছিলেন বলে -না তার পুত্র জন্ম হয়েছে। আমি তা নবজাতকে খুলে নিয়েছি। প্রতিদিন কত রোগি আসে মনে কি থাকবে। তিনিও আমাকে আপ্যায়নে করাতে চাইলেন। না করি বলে, আপনাদের কাছ থেকে হসপিটালে কত আন্তরিক দিয়ে সেবা পাইছি। আপনার জন্য এইটুকু করতে পারি না। আপনি কত খোঁজ খেয়াল রাখছেন। ভিষণ ভালো লাগলো। রোগিরা আমার কাছে নিজের পরিবার মতই আপন ভেবে সেবা দিতে চেষ্টা করি। যে কোন কাজেই যদি ভালোবাসা আর আন্তরিকতা থাকে তাহলে সেটি বৃথা যায় না। আমার কাজে সবসময় ভালোবাসা দিয়ে করার চেষ্টা করি। হসপিটালে সাবেক দুজন পেশেন্ট সদস্য নাস্তা খাওয়া। তাদের ভালোবাসাময় আচরণ আমাকে মুগ্ধ করে। দাম কমিয়ে শেষমেষ নিজের সাধ্যের ভেতর প্রথম দোকানি ভাই কাছ থেকে কিনে নিলাম ওয়ার্ড ড্রয়ার। তাদের ভালোবাসায় তখন প্রিয় কর্মস্থ’ল ফ্রিডম হাসপাতালে রোগিদের প্রতি আমাদের সেবাকে সার্থক মনে হলো।
তাসলিমা খানম বীথি
ফ্রিডম জেনারেল হাসপাতাল
এয়ারর্পোট রোড আম্বরখানা সিলেট
18 জুলাই 2022